বিএনপির মুখে কোনও কিছু বাধে না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে খুব বেশি গরম পড়লেও আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপানো হবে।
সোমবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারকে দায়ী করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পঞ্চগড়ের ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারা উসকানি দিয়েছে, এর মধ্যে যারা অ্যারেস্ট হয়েছে তাদের নেতাও আছে। এই ঘটনায় কারা উসকানি দিচ্ছে? রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পেও…।’
তিনি বলেন, ‘এখন তারা যে স্বাভাবিক পথে যেতে চায় না, তাদের আন্দোলনে ভাটা নেমেছে; সে কারণে তারা এখন নাশকতার দিকে যাচ্ছে কিনা, সেটা কিন্তু আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগল কেন? একইসঙ্গে এই ঘটনাগুলো ঘটছে। আর সব দোষ আওয়ামী লীগের ওপর চাপায়। ওখানে অক্সিজেন ব্লাস্ট হয়ে এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে। দোষ কার? আওয়ামী লীগের। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কার্বনডাইঅক্সাইড আর নাইট্রোজেন একই জায়গায় রাখাতে সংঘর্ষ হয়ে ব্লাস্ট হয়েছে। দোষ কার? আওয়ামী লীগের।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমার কাছে মনে হচ্ছে মির্জা ফখরুল যেভাবে বলছেন তাতে মনে হয় বাংলাদেশে এই মুহূর্তে খুব বেশি গরম পড়লে বলবে দোষ আওয়ামী লীগের! হঠাৎ খুব বেশি শীত হলে দোষ আওয়ামী লীগের! হঠাৎ করে বন্যা এলে দোষ আওয়ামী লীগের! তারপরে বলবে যে বাংলাদেশে বজ্রপাতে এত লোকের মৃত্যু, এটাও দোষ আওয়ামী লীগের! এটা বিএনপি বলতে পারে। বিএনপি’র মুখে কোনও কিছু বাধে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় আছে আত্মহত্যা করার জন্য? সরকার তো দেশের শান্তি চাইবে ক্ষমতায় থাকার জন্য। সরকার কেন গোলমাল লাগাবে? গোলমাল তো লাগাচ্ছে তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। ক্ষমতায় থাকার জন্য কেউ গোলমাল করে না। ক্ষমতায় থাকার জন্য শান্তিপূর্ণ একটি পরিবেশ সবাই চায়, যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন বাস্তবে যত গর্জে তত বর্ষে না। তারা গণঅভুত্থানের কথা বলে এখন নিঃশব্দ মানববন্ধনের কথা বলছে। তাদের আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি দেখে বোঝা যায়, তাতে জনগণ অংশগ্রহণ করছে না। নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণও কমে গেছে। তাদের আন্দোলনকে আমরা চ্যালেঞ্জ মনে করছি না। তারা সহিংসতা করলে আমরা মোকাবিলা করবো।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনৈতিক সংকট আছে, এটা চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। যুদ্ধ অচিরেই থেমে যাবে বলা যায় না। নিষেধাজ্ঞা আছে। এর ফলে সারা দুনিয়াতেই পণ্যের দাম বেড়েছে। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করছে। এরপরও পণ্যের দাম বেশি। সরকার চিন্তিত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া নিয়ে। তবে এক্ষেত্রে জনগণ সরকারের সঙ্গে আছে। সে কারণে বিএনপির আন্দেলনের সঙ্গে জনগণ এখন পর্যন্ত নেই।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি কথা বললেই সরকার মামলা দেয় না। এর প্রমাণ কী? প্রমাণ হলো, তারা প্রতিদিন সরকারকে আক্রমণ করছে, উসকানিমূলক কথা বলছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এরপরও তাদের নেতারা কি জেলে আছে? তারা সমাবেশ করছে।’