হামজা চৌধুরীকে ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়েই চলেছে। নতুন বছরের মার্চে এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে ভারতের বিপক্ষে ২৭ বছর বয়সী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের লাল-সবুজ দলে অভিষেক হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে হামজার মতো ইউরোপের সেরা লিগে খেলা একজন ফুটবলার যখন বাংলাদেশ দলে খেলবেন, অন্যরা তার সঙ্গে কতটুকু তাল মেলাতে পারবেন?
যদিও এরই মধ্যে ডিফেন্ডার তপু বর্মণসহ অনেকেই আশার কথা শুনিয়েছেন। পেশাদার খেলোয়াড় হয়ে যেকোনও পরিস্থিতিতে খেলতে তাদের আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই। তবে দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক বিষয়টা অন্যভাবে দেখছেন। তার দৃষ্টিতে, আগে হামজার খেলার পজিশন ঠিক করতে হবে। তারপর আসবে অন্যরা কতটুকু মানিয়ে নিচ্ছে কিংবা হামজার বেলাতেও একই কথা প্রযোজ্য।
উয়েফা ‘এ’ লাইসেন্স করার সময় হামজার খেলা মাঠ বসে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে লাল সবুজ দলের ৫৫ বছর বয়সী সাবেক কোচের। সেই অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে যা শোনালেন, ‘ওর খেলা আগে আমি ইংল্যান্ডে বসে দেখেছি। দুটি ম্যাচের একটি তো টটেনহামের সঙ্গে। সেটা ছিল ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ গোলের ম্যাচ। ওখানে মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছিল। তাই বলছি বাংলাদেশ দলে সেন্টার মিডফিল্ডার হিসেবে ও খেলতে পারলে ভালো হবে। রাকিব বা ফাহিম যেভাবে ফরোয়ার্ড পজিশনে মুভমেন্ট করে। হামজা থাকলে ওদের জন্য সুবিধা হবে। দেখা যায় ফরোয়ার্ডে যারা খেলে, তারা অনেক সময় ঠিকমতো বল পায় না। হামজার বল দেওয়াটা তখন ঠিকঠাক হবে।’
সাধারণত ক্লাবগুলো জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচের ৭২ ঘণ্টা আগে খেলোয়াড় ছেড়ে থাকে। তাই অল্প সময়ে বাংলাদেশ দলে এসে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা হামজার জন্য শুধু নয়, তপু-জামালদের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ।
মারুফুল বলছিলেন, ‘ওরা পেশাদার খেলোয়াড়। যেকোনও পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে পারে। তবে হামজা বাংলাদেশ দলের হয়ে কয়েকটা সেশন করতে পারলে সুবিধা হতো। আর আমাদের খেলোয়াড়দের মেধা অনুযায়ী সর্বোচ্চটা দিতে হবে। তাহলে মানিয়ে নেওয়া বা সমন্বয়টা ভালো হবে বলে আমার বিশ্বাস।’
হামজাকে তাই অন্তত জাতীয় দলের ম্যাচের সাত দিন আগে অনুশীলনে পেলে ভালো হয় বলে মন্তব্য করলেন উয়েফার বর্তমান এএফসি প্রো-লাইসেন্সধারী কোচ, ‘হামজা যখন খেলবে, তখন দলের নিউক্লিয়াস হবে ও। ওকে ঘিরে খেলা চলবে। তখন সবাই সর্বোচ্চটা দেবে। তবে তার আগে অনুশীলনের সেশন কয়েকটা হলে ভালো হতো। আর ক্লাব থেকে হামজা যদি সাত দিন আগে আসতে পারেন তাহলে তো ভালো হয়। এটিতে খেলোয়াড় ও ফেডারেশনকে ভূমিকা রাখতে হবে।’
একসময় দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে খেলেছেন নাবীব নেওয়াজ জীবন। মারুফুলের পর হামজার বিষয়ে কথা বলেছেন ৩৪ বছর বয়সী স্ট্রাইকারও, ‘আসলে হামজা তো অনেক বড়মাপের খেলোয়াড়। তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া কিংবা একই গতিতে খেলাটা কঠিন। তবে বাংলাদেশ দলে যারা থাকবে তারাও তো পেশাদার খেলোয়াড়। আমার মনে হয় শুরুতে একটু সমস্যা হলেও তা ঠিক হয়ে যাবে। সবাইকে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। কোচকেও সেভাবে খেলোয়াড়দের মানসিক বা টেকনিক্যালি তৈরি করতে হবে। তাহলেই আশাবাদী হওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।’