দুই দলের বাকি ব্যাটাররা যেখানে রান তুলতে গিয়ে ঘাম ছুটিয়ে দিলেন সেখানে রীতিমত ঝড় তুললেন তানজিদ হাসান তামিম। লক্ষ্যটা নাগালে চলে আসায় সেঞ্চুরিটা হয়নি যদিও। তবে তার ব্যাটে চিটাগং কিংসকে উড়িয়ে জয়ে ফিরেছে ঢাকা ক্যাপিটাল।
চলতি বিপিএলের ২৯তম ম্যাচে বুধবার চট্টগ্রামকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা। ১৪৯ রানের লক্ষ্য তারা পূরণ করে ১১ বল হাতে রেখেই। ৭ ছক্কায় ৫৪ বলে অপরাজিত ৯০ রানের ইনিংসে রাজধানীর দলটির জয়ের নায়ক তানজিদ।
১০ ম্যাচে তৃতীয় জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে উঠে এসেছে ঢাকা। সবশেষ চার ম্যাচেই তিন জয় পেয়েছে দলটি। ৯ ম্যাচে চতুর্থ পরাজয়ে এক ধাপ নেমে তিনে চট্টগ্রাম কিংস।
রান তাড়ায় ওপেনিং জুটিতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় ঢাকা। ৯ ওভারে ৭৫ রানে যোগ করেন লিটন দাস ও তানজিদ। আসরে এই জুটি থেকেই এসেছে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪৭৭ রান। এর মধ্যে একটি ম্যাচে দুজনের জুটি হয়েছিল তৃতীয় উইকেটে, বাকি ৮টিতে ওপেনিংয়ে ৪৬৯।
এবারের বিপিএলে যেকোনো উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান অ্যালেক্স হেলস–সাইফ হাসান জুটির ৩৪৩। সেটা অবশ্য কেবল ৪ ইনিংসে। শুধু ওপেনিং বিবেচনায় নিলে তানজিদ–লিটনের ধারেকাছেও কেউ নেই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুর্বার রাজশাহীর জিশান আলম–মোহাম্মদ হারিস জুটির ১৭৩।
এদিন লিটনের অবদান অবশ্য ২৮ বলে ৩ চারে কেবল ২৫ রান। মুনিম শাহরিয়ার (১৮ বলে ১২) ও সাব্বির রহমানকে (৯ বলে ১৪) নিয়ে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তানজিদ।
টুর্নামেন্টের এই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এদিন ফিফটি স্পর্শ করেন ২৮ বলে। তার ৫৪ বলে অপরাজিত ৯০ রানের ইনিংসে ৭টি ছক্কার পাশাপাশি আছে ৩টি চারের মার।
এবারের আসরে তার মোট ছক্কা হলো ২৯টি। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এক আসরে এটিই সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড।
গত বছর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ১৪ ইনিংসে ২৪টি ছক্কা মেরেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। এবার ১০ ইনিংসেই তাকে ছাড়িয়ে গেলেন তানজিদ। সব মিলিয়ে এক আসরে তানজিদের চেয়ে বেশি ছক্কা আছে শুধু ক্রিস গেইলের (৪৭টি)।
দলের জয়ের ক্ষেত্রটা অবশ্য তৈরি করে দিয়েছিলেন বোলাররা। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটে নেমে থিতু হয়েও ঝড় তুলতে পারেনি চট্টগ্রামের টপ অর্ডার। উইকেট না হারিয়েও অদ্ভুদ কারণে পাওয়ার প্লে-তে আসে কেবল ৩০ রান।
অষ্টম ওভারে জুবাইব আকবারিকে (১৯ বলে ২৩) বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মোসাদ্দেক হোসেন। তিনে নামা গ্রাহাম ক্লার্ব আউট হন ১৮ বলে ১৯ রান করে। নাজমুল ইসলামের করা সেই ১৩তম ওভারেই আউট হন হুসাইন তালাত। পরের ওভারে নাইম ইসলাম আউট হন ৪০ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ রান করে। ১ উইকেটে ৮৯ থেকে মুহূর্তেই স্কোরবোর্ড হয়ে যায় ৪ উইকেটে ৯৬।
ছক্কা-চারে অভ্যস্ত শামীম হোসেনের ব্যাটেও এদিন কোনো বাউন্ডারি দেখা যায়নি ১৬ বল খেলেও। ১৫ রানে বিদায় নেন এই মারকুটে ব্যাটার। ১১ বলে ১৬ রান করেন হায়দার আলি। অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন ৮ বলে ১২ ও খালেদ আহমেদ ৬ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
মোসাদ্দেক ৩ ওভারে ১৩ রানে নেন ২ উইকেট। ৩ ওভারে ২৭ রানে ২টি শিকার ধরেন নাজমুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগং কিংস: ২০ ওভারে ১৪৮/৬ (নাঈম ৪৪, আকবারি ২৩, ক্লার্ক ১৯, তালাত ২, শামীম ১৫, হায়দার ১৬, মিঠুন ১২, খালেদ ৮*; মুস্তাফিজ ৪-১-১৮-০, বিটন ৪-০-৩৫-১, মোসাদ্দেক ৩-০-১৩-২, মেহেদি ৪-০-৩১-১, পেরেরা ২-০-২০-০, নাজমুল ৩-০-২৭-২)
ঢাকা ক্যাপিটালস: ১৮.১ ওভারে ১৪৯/২ (তানজিদ ৯০*, লিটন ২৫, মুনিম ১২, সাব্বির ১৪*; শরিফুল ৩.১-০-৩৯-০, আলিস ৪-০-১৮-১, খালেদ ৪-০-৩৬-০, সানি ৩-০-২৪-০, তলত ৩-০-২৩-০, নাঈম ১-০-৪-০))
ফল: ঢাকা ক্যাপিটালস ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: তানজিদ হাসান