ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ভাণ্ডারে অ্যাক্সেস না পেলে দেশটিতে স্টারলিংক পরিষেবা বন্ধ করার বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বিষয়ে অবগত তিন কর্মকর্তার বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই তিন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের প্রাথমিক প্রস্তাব প্রত্যাখান করার পর দু পক্ষের বৈঠকে দেশটিতে স্টারলিংকের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি উঠে আসে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ও এর সেনাবাহিনীর জন্য ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ধনকুবের ইলন মাস্কের স্টারলিংক। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হলে দেশটির যোগাযোগ অবকাঠামোতে ব্যাপক হামলা চালায় মস্কো। ওই সময় ইউক্রেনে স্টারলিংকের হাজারো টার্মিনাল স্থাপন করে রীতিমতো নায়ক বনে যান ইলন মাস্ক। এই পরিষেবার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এটি মহাকাশ থেকে তরঙ্গের মাধ্যমে ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানে সক্ষম।
ওই তিন কর্মকর্তার একজন জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ খনিজের বিষয়ে কিয়েভ সম্মত না হলে যে কোনও সময় স্টারলিংক পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলে সর্বশেষ বৈঠকে বলা হয়েছে। সমুদ্রে নাবিকের কাছে ধ্রুবতারা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, স্টারলিংকের ওপর ইউক্রেন তেমনি প্রচণ্ডভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই সুবিধা বন্ধ হলে তারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে।
রাশিয়ার সঙ্গে প্রায় তিন বছরের যুদ্ধে ওয়াশিংটনের সহায়তার প্রতিদান হিসেবে ইউক্রেনের কাছে ৫০০ বিলিয়ন বা ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের খনিজ সম্পদ দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই দাবি প্রত্যাখান করে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার স্পষ্ট নিশ্চয়তা পায়নি তারা।
অবশ্য এই লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর, রয়টার্সের প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দেন ইলন মাস্ক। এরপর তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মাস্কের দিক থেকে কোনও সাড়া পায়নি রয়টার্স।
রয়টার্সের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা নিজেদের প্রতিবেদনে এখনও স্থির আছে।
এই প্রতিবেদনের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইউক্রেন দূতাবাস, হোয়াইট হাউজ, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্টারলিংক পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে কোনও পক্ষই এ বিষয়ে সাড়া দেয়নি।
এদিকে, শুক্রবার জেলেনস্কি বলেছেন, মার্কিন ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল একটি সমঝোতার প্রস্তাব নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ওদিকে ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন, দ্রুতই একটি চুক্তি সম্পাদিত হতে যাচ্ছে।
রুশ রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করতে আগামী দুসপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন রুশ ও মার্কিন মধ্যস্থতাকারীরা। গত মঙ্গলবার রিয়াদে প্রথম বৈঠকের আয়োজন করা হয়।