রুশ বাহিনীর ১২০ টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০ টি ড্রোন হামলায় ইউক্রেইনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ‘মারাত্মক ক্ষতি’ ছাড়াও নিহত হয়েছে অন্তত ৭ জন।
রাশিয়া প্রায় তিনমাসের মধ্যে রোববার ইউক্রেইনে দফায় দফায় সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালিয়েছে। ১২০ টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০ টি ড্রোন হামলায় ইউক্রেইনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ‘মারাত্মক ক্ষতি’ হয়েছে। নিহত হয়েছে অন্তত ৭ জন। কর্মকর্তারা একথা জানিয়েছেন।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইউক্রেইনীয়রা তাদের জবুথবু জ্বালানি ব্যবস্থায় রুশ বাহিনীর এই হামলা হওয়ার আশঙ্কায় ছিল। বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চলতি শীতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা ছিল।
এর মধ্যেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় রাশিয়ার এই তুমুল হামলা হল। এতে বহু অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমাতে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাতে রাজধানী কিইভে ড্রোনের আওয়াজ শোনা যায় এবং রোববার সকালেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়। এ সময় শহরের কেন্দ্রস্থল জুড়ে একের পর এক শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
কিইভের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, সেনাবাহিনী রাশিয়ার ছোড়া ১২০ টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ১০৪ টি ধ্বংস করেছে এবং ৯০ টি ড্রোনের মধ্যে ৪২ টি ধ্বংস করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ও ইউক্রেইনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে।
ইউক্রেইনের বৃহত্তম বেসরকারি জ্বালানি সরবরাহকারী সংস্থা ‘ডিটিইকে’- এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্সিম টিমচেনকো বলেছেন, ‘ডিটিইকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ইউক্রেইনের জ্বালানি ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এই আক্রমণ আবারও মিত্রদের কাছ থেকে ইউক্রেইনের বাড়তি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।”
বিদ্যুৎকেন্দ্রে বারবার রুশ হামলার পর ইউক্রেইনের কর্মকর্তারা তাদের জ্বালানি অবকাঠামোর অবস্থা এবং হামলার ফলে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে থাকেন খুব কমই। কিন্তু এবার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ক্ষতি হওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
তারা পশ্চিমে ভলিন, রিভেন, লিভিভ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দনিপ্রপেত্রভোস্ক ও জাপোরিজিয়ার বিস্তৃত অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর দিয়েছেন। ডিটিইকে জ্বালানি কর্মকর্তাদের নির্দেশে দক্ষিণ ওডেসা অঞ্চলে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “ইউক্রেইনের সব অঞ্চলকে নিশানা করে ব্যাপক সম্মিলিত হামলা চালানো হয়েছে।”
দক্ষিণে মাইকোলাইভে রাতভর ড্রোন হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে নগরীর গভর্নর। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডিনিপ্রপত্রোভোস্ক অঞ্চলে একটি রেল ডিপোতে হামলায় আরও দুইজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন।
পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী লিভিভ অঞ্চলে গাড়িতে থাকা এক নারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গভর্নর। ওডেসা অঞ্চলে আরও দুইজন নিহত হয়েছে।