ঢাকার একাধিক সড়ক অবরোধ করে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে সরকারকে কয়েক ঘণ্টার আলটিমেটামের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধিভুক্ত সাত কলেজ আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আপাতত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে।
এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে আবারো রাস্তায় নেমে আসার প্রেক্ষাপটে এখন নতুন করে প্রশ্ন উঠছে গত কয়েক বছর ধরে এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত বিরতিতে রাস্তায় নামতে হচ্ছে কেন?
কারও কারও ধারণা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোর বাইরের কিছু বিষয়ও মাঝে মধ্যে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামার বিষয়ে ভূমিকা রেখেছে এবং এর কোনো কোনোটির মধ্যে শিক্ষকদের ইন্ধনের অভিযোগও পাওয়া গেছে বিভিন্ন সময়ে। যদিও কলেজগুলোর শিক্ষকরা সবসময়ই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।
যদিও শিক্ষার্থীরা বলছেন এসব কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি ছাড়াও বিভিন্ন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে এসে হেনস্থার শিকার হওয়া, রুটিন ও পরীক্ষা নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থাসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান না হওয়াটাই তাদের বারবার রাস্তায় নেমে আসার কারণ।
“অন্তত ৩৫টি দাবি করেছি বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু কোনোটিরই সমাধান হয়নি। কেউ দায়িত্ব নেয় না। ক্লাস রুটিন পর্যন্ত ঠিক মতো হয় না। এভাবে তো চলতে পারে না। এগুলো ঠিক হয় না বলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি উঠেছে এবং সেটাই সমাধান,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন চলমান আন্দোলনের সংগঠকদের একজন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ রবিন ইসলাম।
এবারের অচলাবস্থার সূচনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের দুর্ব্যবহারকেই দায়ী করছেন মি. ইসলাম।
রোববার সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে মি. আহমেদের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি অসদাচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করে আন্দোলন শুরু করে ওই শিক্ষার্থীরা। মি. আহমেদ অবশ্য পরে তার ব্যবহারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলছেন, সাত কলেজ পরিচালনায় যথাযথ মনোযোগ না দেয়ার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতার ঘাটতির কারণেই বারবার সংকট তৈরি হচ্ছে এবং এসব সংকটের জের ধরেই নিয়মিত বিরতিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামছে বলে মনে করেন তিনি।
এসব বিষয়ে দুটি কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি। আর একটি কলেজের অধ্যক্ষ নাম না প্রকাশ করার অনুরোধ করে শুধু বলেছেন ‘স্বনামধন্য এই কলেজগুলোর সুনামের প্রতি সুবিচার করা হলে বারবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না’।