নিজস্ব প্রতিবেদক: আবারো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) কর্তৃক বিশেষ অভিযানে ১ কেজি ৬০০ গ্রাম মাদক মিথাইল এ্যামফিটামিনযুক্ত (আইস), বিপুল পরিমাণ এ্যামফিটামিনযুক্ত ইয়াবা ও অষ্ট্রেলিয়া হতে আগত ২৮০ গ্রাম টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ ও ৬০০ গ্রাম উদ্দীপক মাদক কোকেনসহ গ্রেফতার ৫, এসময় আইসের মূল হোতা পলাতক

সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসি-র অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ গোলাম আজম, গোয়েন্দার অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ বদরুদ্দীন, বিভাগীয় কার্যালয় ঢাকার অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম, গোয়েন্দা কার্যালয় ঢাকার উপপরিচালক খোরশিদ আলম, ঢাকা মেট্রো উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ ও মোঃ মেহেদী হাসান।
আজ (মঙ্গলবার) ২৬শে আগষ্ট, ২০২৫ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) এর উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ এর নেতৃত্বে একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে (সোমবার) ২৫শে আগষ্ট আদাবর থানাধীন, বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটির একটি বাসা থেকে মোঃ খাইরুল ইসলাম ওরফে রিয়ান (২৬)কে ৪০০০(চার হাজার) পিস ইয়াবাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করে। আসামীর স্বীকারোক্তিতে, মোঃ সৌরভ ইসলাম শান্ত ওরফে মোঃ তোফায়েল হোসেন শান্ত (পলাতক) এর ভাড়াকৃত বাসায় অভিযান পরিচালনা করে একাধিক মাদক মামলার আসামী মিলন মোল্লাকে ১(এক) কেজি ৬০০ (ছয়শত) গ্রাম ভয়ংকর মাদক মিথাইল এ্যামফিটামিন (আইস)সহ হাতেনাতে গ্রেফতার করে। উক্ত মাদক ও মাদক ব্যবসার মূল মালিক মোঃ সৌরভ ইসলাম শান্ত ওরফে মোঃ তোফায়েল হোসেন শান্ত ও ইয়াছমিন আক্তার আঁখি পলাতক রয়েছে।
একই দিনে, অপর একটি অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান এর নেতৃত্বে একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পল্টন মডেল থানাধীন পুরাতন ডাক ভবন বৈদেশিক ডাক থেকে টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ ২৮০ (দুইশত আশি) গ্রামসহ মো: শহিদুল ইসলাম(৪৫)কে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪৫) কে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে শুকুর মোহাম্মদ রিপন (৫০)কে হাতেনাতে গ্রেফতার করে।

উদ্ধারকৃত আলামত
এছাড়াও, ২৬শে আগষ্ট ২০২৫ বাংলাদেশ কাস্টম ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে গায়ান রিপাবলিকের নাগরিক Karen PETULA নামীয় একজন নারীকে ৮ (আট) কেজি ৬০০ (ছয়শত) গ্রাম উদ্দীপক মাদক কোকেনসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে, সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তর (ডিএনসি)র অতিরিক্ত মহাপরিচালক গোলাম আজম বলেন, এটি দেশের ইতিহাসে উদ্ধার হওয়া সর্বোচ্চ কোকেন। এর আগে ছিল ৮ কেজি ৩ গ্রাম। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গায়ানার নাগরিকে ৮ কেজি ৬০০ গ্রাম কোকেনসহ আটক করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসি-র অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ গোলাম আজম, গোয়েন্দার অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ বদরুদ্দীন, বিভাগীয় কার্যালয় ঢাকার অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম, গোয়েন্দা কার্যালয় ঢাকার উপপরিচালক খোরশিদ আলম, ঢাকা মেট্রো উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ ও মোঃ মেহেদী হাসান।
মাদকের চালান উদ্ধার হলেও মূলহোতারা গ্রেপ্তার না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদকের মামলাগুলো হয় যার কাছে পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে আইনের আওতায় তাদের আনা সহজ হয় না। তবে যারা গডফাদার তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত ১২টি মামলা দেওয়া হয়েছে। ২৭টি মামলা তদন্ত দেওয়া হয়েছে।
কোকেনের চালানের গন্তব্য বাংলাদেশ ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই নারী ব্রাজিল থেকে কোকেন সংগ্রহ করেন। এরপর তিনি নিউইয়র্ক আসেন, এরপর কাতারের দোহার হয়ে ঢাকায় আসেন। এই ঘটনায় শুল্ক গোয়েন্দা মামলা করেছে। তবে শেষ গন্তব্য জানতে হলে তদন্ত করতে হবে। আপনারা জানেন, বাংলাদেশে কোকেনের বাজার নেই। তাই এটার গন্তব্য কোথায় সেটা তদন্ত শেষে বলা যাবে। উদ্ধারকৃত মাদক আইসের মূল হোতা মোঃ সৌরভ ইসলাম শান্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি তালিকাভুক্ত মাদককারবারীর গডফাদার। তার নামে বিভিন্ন থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)-র গোয়েন্দার অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ বদরুদ্দীন, বিভাগীয় কার্যালয় ঢাকার অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম, গোয়েন্দা কার্যালয় ঢাকার উপপরিচালক খোরশিদ আলম, ঢাকা মেট্রো উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ ও মোঃ মেহেদী হাসান।
পলাতক আসামীদ্বয় ও গ্রেফতারকৃত মিলন মোল্লাসহ ৪জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ (সংশোধিত-২০২০) অনুযায়ী নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।