নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)-র দেশব্যাপী অভিযান অব্যাহত। আবারো ঢাকা মেট্রো (উত্তর), (দক্ষিণ) ও গোয়েন্দা ময়মনসিংহ কর্তৃক বিপুল পরিমান মাদক গাঁজা, ইয়াবা ও টাপেন্টাডল উদ্ধার।
ঢাকা মেট্রো (উত্তর)
(মঙ্গলবার) ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম এর নির্দেশনায়, ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (উত্তর) এর উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ এর নেতৃত্বে, উত্তরা সার্কেল এর সমন্বয়ে গঠিত একটি রেইডিং টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, সবুজবাগ থানাধীন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৪৭০০ (চার হাজার সাতশত) পিস ইয়াবাসহ মোঃ সাহাবুদ্দিন(৪৩)কে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামী গত ৫মে ২০২৪ ইং তারিখে ৩৭০০ (তিন হাজার সাতশত) পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়। যাত্রাবাড়ী থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল। সম্প্রতি জেল থেকে জামিনে বের হয়ে আবারও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা সরবরাহ করে থাকে। আসামীর বিরুদ্ধে পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ)
এদিকে ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (দক্ষিণ) এর উপপরিচালক মোঃ মানজুরুল ইসলাম এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে মাদকের হোম ডেলিভারি চক্রের মোট ৭ জনকে ১৬৭০ (এক হাজার ছয়শত সত্তর) পিস ইয়াবা, ৭ (সাত) গ্রাম আইস ও ১৯০ (একশত নব্বই) পিস টাপেন্টাডলসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করে।
জানা যায়, গত ৩০শে নভেম্বর ২০২৪ মতিঝিল সার্কেলের পরিদর্শক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে একটি টিম হাজারীবাগ থানাধীন ৬৩/১ বাড্ডা নগর লেন থেকে ৫০ (পঞ্চাশ) পিস ইয়াবাসহ আঁখি আক্তার (৩৪) এবং তেজগাঁও থানাধীন পশ্চিম নাখালপাড়া বেলাল মসজিদ রোড থেকে ১,৪৫০ (এক হাজার চারশত পঞ্চাশ) পিস ইয়াবাসহ মোঃ রিপন আলী (৩৬)কে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই চক্রের সদস্য রিফাত রহমান রোদেলা (২৭)কে ১লা ডিসেম্বর ২০২৪ ডেমরা সার্কেলের পরিদর্শক মোঃ খাইরুল আলমের নেতৃত্বে একটি টিম শেরেবাংলা নগর থানাধীন শ্যামলীস্থ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের গেটের সামনে অভিযান পরিচালনা করে ৭ (সাত) গ্রাম মেথামফিটামিনযুক্ত ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ গ্রেপ্তার করে। একই টিম ধানমন্ডি থানাধীন স্টার কাবাব এন্ড রেস্টুরেন্ট এর সামনে ৫০ (পঞ্চাশ) পিস ইয়াবাসহ মোহাম্মদ আলী মুকুল (৩৮) এবং ধানমন্ডি থানাধীন ৭ নম্বর রোড থেকে ১০ (দশ) পিস ইয়াবাসহ মোঃ আফিফ আফতাফ (৫১)কে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
অন্যদিকে ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ সবুজবাগ সার্কেলের পরিদর্শক মোঃ এনামুল হক এর নেতৃত্বে একটি টিম শ্যামপুর থানাধীন মির হাজিরবাগ পাইপ এলাকা থেকে ১১০ (একশত দশ) পিস ইয়াবাসহ উক্ত চক্রের সদস্য মোছাঃ আনোয়ারা আলেয়া বেগম (৩২)কে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।
এবং একইদিনে খিলগাঁও সার্কেলের পরিদর্শক মোঃ ছিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি টিম উত্তরা পশ্চিম থানাধীন সেক্টর নং ১০ এর রোড নং ০১ এলাকার বিসমিল্লাহ ফার্মেসি এন্ড ডিপার্টমেন্ট ষ্টোর থেকে ১৯০ (একশথ নব্বই) পিস ট্যাপেন্ডাডল ট্যাবলেটসহ উক্ত চক্রের সদস্য নেয়ামত হোসেন (৩০)কে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।
উপপরিচালক মোঃ মানজুরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোঃ কার্যালয় (দক্ষিণ) কর্তৃক আটককৃত টেকনাফভিত্তিক ইয়াবা কারবারিদের জিজ্ঞাসাবাদে রাজধানী ঢাকা জুড়ে একটি সক্রিয় মাদক চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। চক্রটির অধিকাংশ সদস্য নারী এবং এরা বিভিন্ন কৌশলে ইয়াবা ও আইস মাদকসেবীদের বাসায় পৌঁছে দেয়ার কাজ করে। পেট চুক্তিতে ইয়াবা পাচারকারীরা ঢাকার সন্নিকটে বিভিন্ন এলাকায় টেকনাফ থেকে ইয়াবা পৌঁছে দেয়। এসব এলাকা থেকে একটি চক্র মূল মাদকের চালান ভেঙ্গে ভেঙ্গে এসব ডেলিভারি ম্যানদের নিকট পাঠায়। পরে এরা চুক্তি অনুযায়ী ক্রেতাদের নিকট পৌঁছে দিতো। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রিফাত রহমান রোদেলা (২৭) মূলত অভিজাত এলাকায় আইস সরবরাহ সিন্ডিকেটের অন্যতম মূল হোতা। ইতোপূর্বেও আইসসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল রোদেলা। আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী পৃথক পৃথক নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
গোয়েন্দা ময়মনসিংহ
এছাড়াও (সোমবার) ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয় ময়মনসিংহ এর সহকারী পরিচালক মোঃ কাওসারুল হাসান রনি এর নেতৃত্বে একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর থানাধীন বোকাইনগর ত্রিশাঘর গ্রামস্থ মোছাঃ আবেদা বেগম এর নিজ দখলীয় বসতবাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে ১৪২ (একশত বেয়াল্লিশ) কেজি গাঁজা ও একটি মোবাইল ফোনসহ একই গ্রামের দুইজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী শরিফ মিয়া(২৪) ও মোকছেদুল জিম(৩২)কে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। এসময় রেইডিং টিমের উপস্থিতি টের পেয়ে অপর আসামী মোছাঃ আবেদা বেগম (৫৫) ও মোঃ বাবুল মিয়া(৩৩) পালিয়ে যায়। আসামীদের বিরুদ্ধে সহকারী পরিচালক মোঃ কাওসারুল হাসান রনি বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন।