[১] কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) জানিয়েছে, দেশে পানির বাজার এখন হাজার কোটি টাকার। প্রতি বছর ৩৫ থেকে ৪০ কোটি লিটার বোতলজাত পানি বিক্রি হয়। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বোতলজাত পানির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোগ্যপন্য উৎপাদনকারী বড় বড় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেরই এখন পানির ব্যবসা রয়েছে। সংগঠনটি অবিলম্বে পানির অযৌক্তিক দাম বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন। বোতলজাত সব ধরনের পানির হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি অন্যায়, অযৌক্তিক ও ভোক্তা স্বার্থবিরোধী বলে মন্তব্য করেছে।
[২] (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে সংগঠনটি এসব দাবি জানায়।
[৩] ক্যাবের দাবি করেছে, অবিলম্বে সব ধরনের বোতলজাত পানির অযৌক্তিক, অন্যায় ও অন্যায্য মূল্যবৃদ্ধি বাতিল করতে হবে; ভোক্তাদের সাস্রয়ী মূল্যে নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বোতলজাত পানির মূল্য স্বাভাবিক করতে প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান জোটবদ্ধভাবে হঠাৎ বোতলজাত পানির দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে ভোক্তা সাধারণকে কষ্টে ফেলেছে তাদের আইনানুগ বিচার ও শাস্তি দিতে হবে।
[৪] মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। দেশে চলছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, মানুষ এমনিতেই নানাভাবে বিপদগ্রস্ত। এমন সময়ে হঠাৎ বাজারে বোতলজাত পানির দাম বেড়ে গেছে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই। নিত্যপণ্যের বাড়তি দামের সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে বোতলজাত পানির দাম। বেশ কয়েকটি কোম্পানি প্রতি বোতল পানির দাম বাড়িয়েছে। আধা লিটার পানির বোতল এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।
[৫] হঠাৎ কেন পানির দাম এত বাড়ানো হয়েছে, এর কোনো সদুত্তর মিলছে না। বাজারে যেসব বোতলজাত পানি বিক্রি হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে পরিচিত ব্র্যান্ডের ৫০০ মি.লি. পানির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য এখন ২০ টাকা। কয়েকদিন আগে এসব ব্র্যান্ডের ৫০০ মি.লি. পানির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ছিল ১৫ টাকা। এছাড়া প্রতি ৫০০ মি. লি. বোতলজাত খাবার পানির পাইকারি মূল্য ১১-১২ টাকা। অর্থাৎ ৫০০ মি. লি. পরিমাণের প্রতি বোতল পানি খুচরা পর্যায়ে ৮-৯ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি।
[৬] তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সূত্রে জানতে পেরেছি, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে বোতলজাত পানির অস্বাভাবিক দাম বাড়ার ঘটনাটি তাদের নজরে এসেছে। তারা এ বিষয়ে তদন্ত করছে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকেও জানিয়েছে।
[৭] তারা বলেন, আমরা জানি জনগণকে সুরক্ষা দিতে প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ প্রণীত হয়েছে। এই আইনের লক্ষ্য হিসেবে বলা হয়েছে, যেহেতু দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ উৎসাহিত করিবার, নিশ্চিত ও বজায় রাখিবার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ মনোপলি ও অলিগোপলি অবস্থা, জোটবদ্ধতা অথবা কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিযোগিতা বিরোধী কর্মকাÐ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূলের লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; বিধায় প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ প্রণীত হয়েছে। কিন্তু আমরা সাধারণ ভোক্তারা এই আইনের সুফল পাচ্ছি না। সব ধরনের বোতলজাত পানির হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধিও এরই ধারাবাহিকতা।