শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
Logo মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যশোর কর্তৃক বিপুল পরিমান বিদেশি মদ উদ্ধার Logo এবার লেবানন থেকে সিরিয়া সফরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী Logo গোয়ালিয়রে বাংলাদেশ ম্যাচে ২৫০০ পুলিশ মোতায়েন Logo বিশেষ ছাড়ে সব সুবিধা ঋণ জালিয়াতদেরই Logo অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাই কি দেশে ফেরাবে শেখ হাসিনাকে? Logo বিশ্ব দৃষ্টি দিবস ২০২৪ এবং শিশুদের দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষায় অপটোমেট্রিস্টদের ভূমিকা- ডক্টর মোঃ মিজানুর রহমান Logo ডিএনসি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ কর্তৃক ইয়াবাসহ ২ মাদককারবারী গ্রেফতার Logo মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রংপুর কর্তৃক বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার Logo ডিএনসি ঢাকা মেট্রোঃ দক্ষিণ ও যশোর কর্তৃক বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার Logo মুমিনুলের ১০০, বাংলাদেশের ২০০

সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠাটাই বেশি জরুরি: কচি খন্দকার

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৮ Time View
Update : রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:০৩ অপরাহ্ন

বয়স তার কাছে একটি সংখ্যামাত্র। বয়স তাকে খুব বেশি ভাবায় না, তাকে ভাবায় নিগূঢ় জীবনবোধ। বলছিলাম ছোট পর্দার জনপ্রিয় নির্মাতা ও অভিনেতা কচি খন্দকারের কথা। আজ এই অভিনেতা-নির্মাতার ৬১তম জন্মদিন। বিশেষ এই দিনটি উপলক্ষে ইত্তেফাক ডিজিটালের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। জানালেন, মানবজনমের দায়বদ্ধতা আছে। জীবনভর সেই দায় মেটাতেই মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই এই দায়বদ্ধতা তৈরি হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। আর সেটি হলেই সমাজের সকল অনাচার, সকল সংকট দূর হবে তার বিশ্বাস।

কচি খন্দকার বলেন, ‘আমার দীর্ঘ এই জীবনে সবসময় মানুষ হয়ে উঠতে চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি, আমাদের সত্যিকারের মানুষ হতে হবে। কিন্তু এখানেই আমাদের বাধা। আমরা কতটা মানবিক হতে পারছি। যে কারণে আমরা অনেকই দায়িত্বটা পালন করতে পারছি না। কেউ মানুষ হয়ে উঠতে থাকলে তার মধ্যে দায়বদ্ধতাও তৈরি হতে থাকবে। এইটা একটা সার্কেল। এটা নিয়ে আমরা যত বেশি কাজ করব তত ভালো একটি জাতি উপহার দিতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ দুটি ব্যাপারে আক্রান্ত, একটি হলো আঞ্চলিকতা অপরটি সাম্প্রদায়িকতা। হয়তো সংস্কৃতিগতভাবেই এটা আমরা পেয়েছি। তবে সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে গেলে এই দুটোরই ঊর্দ্ধে উঠতে হবে। বিশ্বনাগরিক হয়ে উঠতে হবে।’

কিন্তু সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় বাধা তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা বলে মনে করেন কচি খন্দকার। তার ভাষ্যে, ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলো মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়। মানুষকে ভালোবাসা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। দায়বদ্ধতা থেকে সরিয়ে ফেলে। সবচেয়ে বড় কথা, ভালোবাসা নিজের মধ্যে লালন করতে কোনো ডিগ্রি লাগে না। এটা একান্ত উপলব্ধির বিষয়।’

কাজ দিয়েই তিনি দর্শকদের মধ্যে তুলে ধরেন নিজের দর্শন। যাপিত দীর্ঘ সময়ের বেশির ভাগ তিনি কাজ নিয়ে ভেবেছেন। বাংলাদেশের মৌলিক গল্পগুলো তুলে ধরেছেন। এসব তাকে মানসিক শান্তি দেয়। তিনি বলেন, ‘আমি যে কনসেপ্ট ও কনটেন্ট লিখেছি বা করেছি, সেগুলো একদমই আলাদা। এই গল্পগুলো অন্য কারও সঙ্গে মিলবে না। এটা নিয়ে আমার দীর্ঘদিনের চেষ্টা ছিল। সেখানে আমি হয়তো কিছুটা সফল হতে পেরেছি।’

১৯৬৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন এই অভিনেতা। সেই হিসাবে এবার ৬১ পেরিয়ে ৬২-তে পা রাখলেন তিনি। তবে এখনো দর্শক তাকে তরুণই মনে করেন। কচি খন্দকার বলেন ‘আমি দর্শকদের কাছে এখনো ভাই। তারা আমাকে এখনো তরুণ দেখতে চায়। বাইরে বের হলে সবাই কচি ভাই ডাকে। অনেকেই জোর করে অনেক আগে থেকে বাবার চরিত্রে অভিনয় করিয়েছেন। প্রথম ‘ব্যাচেলর’ নাটকে বাবা চরিত্রে অভিনয় করি। তরুণ হয়েই মারজুক রাসেলের বাবার চরিত্রে অভিনয় করি। সিনিয়র হওয়ার এই অপচেষ্টা দর্শক এখনো গ্রহণ করে না।’

নাটক রচনা, অভিনেতা ও পরিচালক- সব জায়গায়ই তার সাফল্য আছে। তবে নিজেকে নির্মাতা হিসেবেই তিনি পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। নির্মাতা কচি খন্দকার আর অভিনেতা কচি খন্দকারের মধ্যে কে বেশি গুরুত্বপূর্ণ- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি নির্মাতা কচি খন্দকারকে ১০০ তে ১০০ দেবো, আর অভিনেতা কচি খন্দকারকে দেবো ১০০ তে ৫০।’ তবে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনায়ও কম দেখা যায় তাকে। চরিত্রের বৈচিত্র্য না থাকার কারণে তিনি অভিনয়ও কমিয়ে দিয়েছেন। চলচ্চিত্রে অভিনয় নিয়েও তার অভিমান আছে। এখানেও তিনি মনের মতো চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ডাক পাননি।

টেলিভিশনে তার প্রায় দুই যুগের ক্যারিয়ার। তবে মঞ্চে কাজের অভিজ্ঞতা আরও আগের। ১৯৭৯ সালে জন্মভূমি কুষ্টিয়াতে তিনি মঞ্চনাটক লেখা ও নির্দেশনা দেওয়া শুরু করেন। ছিলেন চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সাথেও। কুষ্টিয়াতে তার গড়া থিয়েটার দলের নাম ছিল অনন্যা’৭৯ নাট্যদল। পরবর্তীতে নব্বই দশকের মাঝামাঝি চাকরিসূত্রে নড়াইল থাকাকালীন সেখানে গড়ে তোলেন চিত্রা থিয়েটার নামে আরেকটি নাট্যদল। তার নেতৃত্বেই নড়াইলে স্থাপিত হয় ‘সুলতান মঞ্চ’।

তিনি জানান, নির্মাতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল চলচ্চিত্র বানানোর। এখন সেদিকেই তিনি হাঁটছেন। আপাতত চলচ্চিত্রের জন্য তিনটি চিত্রনাট্য তৈরি আছে বলে জানান এই নির্মাতা। সেগুলো হলো- ‘মাই ডিয়ার ফুটবল’, ‘খসরু মাইনাস ময়না’ ও ‘দ্য বাইক।’

বর্তমানে তিনি নতুন ধারাবাহিক নাটক নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানালেন। ধারাবাহিকটির নাম ‘তেল ছাড়া পরোটা।’

অভিনয়ে তার আইডল ছিলেন প্রয়াত আলী যাকের এবং হুমায়ূন ফরিদী। এছাড়া তার প্রিয় অভিনেতার তালিকায় আছেন আবুল হায়াত, আমিরুল হক চৌধুরী, তারিক আনাম খান এবং ফজলুর রহমান বাবু। সমসাময়িক অভিনেতাদের মধ্যে মোশাররফ করিম এবং চঞ্চল চৌধুরীকে শক্তিশালী অভিনেতা বলে মনে করেন তিনি।

কচি খন্দকার অভিনীত ও নির্মিত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আছে ‘কবি’, ‘খসরু+ময়না’, ‘ক্যারাম’, ‘ভূগোল’, ‘বাইসাইকেল’, ‘এফডিসি’, ‘অফ দ্য ফুটবল ফর দ্য ফুটবল বাই দ্য ফুটবল’ ইত্যাদি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Design & Developed by : JEWEL