দিল্লিতে জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে জি-২০ দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য ধনীদেশগুলো অর্থায়ন ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটি পূরণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল জোগানেরও অনুরোধ করেন তিনি।
দিল্লিতে জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে, দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এই অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে”। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং এ কারণে উদ্ভূত মূল্যস্ফীতি, বাণিজ্য বাধা ও সাপ্লাই চেইনে সমস্যার কথা তুলে ধরেন বলে জানা যায়। এর আগেও নানান কৈঠকে তিনি বিষয়টি তুলে ধরেন, এই প্রসংঙ্গে বলেন, জলবায়ু অভিবাসী ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গাফিলতি থাকা ঠিক না। তিনি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতিধারা বজায় রাখার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য একটি শালীন জীবনযাত্রার অবস্থা গড়তে সরকার যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে, তা তুলে ধরেন।
ড. মোমেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন অভিবাসন ও বাস্তুচ্যুতির মূল প্রতিকূল চালিকা হিসেবে বিদ্যমান ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং অপরিকল্পিত নগরায়নকে তরান্বিত করে। জলবায়ুকেন্দ্রীক অভিবাসন মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ তীব্রভাবে নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করবে। বাংলাদেশের নিরলস কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ধীরে ধীরে জলবায়ু-সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ব্যবস্থা তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মুখ খুলছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে। বন্যা, খরা, হারিকেন ও অতিশয় গরমে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। ফলে জলবায়ু–সংকটের হাত থেকে বিশ্বকে রক্ষায় জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে সাময়িকীগুলো ওই বিশেষ সম্পাদকীয় প্রকাশ করছে। আসন্ন নভেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন ও স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু সম্মেলনে (কপ–২৬) আগে বিশ্বনেতাদের কাছে বিশেষ বার্তা পৌঁছে দিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘গুরুত্বপূর্ণ এসব সমাবেশের (জাতিসংঘের অধিবেশন ও জলবায়ু সম্মেলেন) আগে আমরা স্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকীর সম্পাদকেরা বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে, প্রকৃতিবিনাশ বন্ধ করতে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, ‘বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। বিশ্ব প্রকৃতি ধ্বংস ও স্বাস্থ্যসেবাদানে যুক্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য অবস্থার বিষয়টি দশকের পর দশক ধরে মনোযোগ আকর্ষণ করছে। বিজ্ঞান অপরিহার্য। বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে বৃদ্ধি ও জীববৈচিত্র্যের অব্যাহত হ্রাস স্বাস্থ্যের বিপর্যয়কর ক্ষতি করছে। তাই এখনই পদক্ষেপ না নিলে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে না। ’