ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এক কোটি ৩১ লাখেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর মধ্যে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। এর মধ্যে অর্ধেকই নারী। বিশেষ করে ডায়াবেটিস আছে— এমন অর্ধেকেরও বেশি মানুষই জানে না যে, তাদের ডায়াবেটিস আছে। ৪৩ শতাংশ মানুষ জানে না তাদের ডায়াবেটিস আছে। সে কারণে এই জটিল রোগ নির্ণয়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধ ও নিয়মিত চেকআপের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ফল। কারণ অনেক ফল রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আবার কিছু ফল হঠাৎ ব্লাড সুগার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীর জানা দরকার— কোন ফল খাওয়া উচিত, আর কোনটি অনুচিত।
আর সে কারণে ডায়াবেটিস রোগী কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও লোডযুক্ত ফল যেমন— আমড়া, জাম্বুরা, আমলকী, জলপাই, পেয়ারা, আপেল, বেরি ও বেদানা খাওয়া উচিত। অন্যদিকে উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও লোডযুক্ত ফল যেমন— আনারস, তরমুজ, আম, কাঁঠাল, আতা, কলা, সবেদা এড়িয়ে চলা উচিত। যদি খেতে হয়, তবে খুব অল্প পরিমাণে খাওয়া উচিত। ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোড দেখে ফল নির্বাচন করা উচিত। কারণ এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সেরা ফল কোনটি—
১. আপেল কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবার। এতে ব্লাড সুগার ধীরে বাড়ায়।
২. পেয়ারায় ভিটামিন সি ও ফাইবারসমৃদ্ধ। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম।
৩. বেরি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার। এতে ব্লাড সুগার ও ইনসুলিন লেভেল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
৪. কমলা ও মুসাম্বি। ভিটামিন সি’তে ভরপুর। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৫. নাশপাতিতে দ্রবণীয় ফাইবার বেশি। হজমে সহায়ক ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য যে ফল এড়িয়ে চলা উচিত—
১. আঙুরে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি। হঠাৎ ব্লাড সুগার বাড়াতে পারে।
২. আমে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোচের মাত্রা বেশি। সীমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
৩. কলায় বিশেষ করে পাকা কলা— উচ্চ জিআই আছে। অল্প পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ।
৪. আনারসে শর্করা বেশি, অতিরিক্ত খেলে ক্ষতি হতে পারে।
পরিশেষে চিকিৎসকরা বলেছেন, ফল সবসময় পুরোটা খাওয়া উচিত, তবে জুস আকারে নয়। আর একসঙ্গে বেশি ফল না খেয়ে অল্প করে কয়েকবার খাওয়া উচিত। খাওয়ার আগে ব্লাড সুগার চেক করলে নিরাপদ সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।