ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডের সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ- ৪৮.৫ ওভারে ২৪৬/১০
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশনে তৃতীয় ওয়ানডেতে শুরুতে টস জিতে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। যদিও শুরুটা প্রত্যাশা মতো হয়নি। ১৭ রানে বিদায় নেন দুই ওপেনার। তার পর মুশফিকুর রহিম- নাজমুল হোসেন শান্ত যেভাবে ব্যাটিং করেছেন। তাতে বড় স্কোরের সম্ভাবনাও উঁকি দিতে থাকে। শান্তর ৫০ রানের পর ৭০ রান করেছেন মুশফিক।
শান্ত-মুশফিক যে অবস্থানে রেখে গিয়েছিলেন তার পর স্বীকৃত ব্যাটাররা যার যার ভূমিকা পালন করলেই স্কোরবোর্ড আরও সমৃদ্ধ হতে পারতো। কিন্তু মিডল অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায় একার লড়াইয়ে দলকে টেনে নিয়েছেন শুধু সাকিব। মুশফিকের পর মাহমুদউল্লাহ দ্রুত ফিরলে চাপ বেড়ে গিয়েছিল। তার পর আফিফকে সঙ্গে নিয়ে ৪৯ রান যোগ করেছেন সাকিব। এই জুটিতেই রান দুইশো অতিক্রম করেছে। জুটিটি সম্ভাবনাময়ও মনে হচ্ছিল। কিন্তু আফিফ বাজে শটে ফিরলে শেষটা আর প্রত্যাশা মতো হয়নি। মিরাজের ব্যর্থতার পর সাকিব শুধু একা ব্যাট করে দলকে আড়াইশোর কাছাকাছি নিয়ে গেছেন। দলীয় ২৪৬ রানে তার ফেরার পর মোস্তাফিজুর রহমানও ফিরলে ইনিংসের সমাপ্তি ঘটেছে সেখানেই।
৩৫ রানে তিনটি উইকেট নিয়েছেন জোফরা আর্চার। ২১ রানে দুটি নিয়েছেন আদিল রশিদ। ৫১ রানে দুটি শিকার করেছেন স্যাম কারানও। ক্রিস ওকস ২৭ রানে একটি ও রেহান ৬২ রানে সমসংখ্যক উইকেট নিয়েছেন।
একার লড়াইয়ের পর ৭১ রানে ফিরলেন সাকিব
লোয়ার অর্ডারে বাকিরা ব্যর্থ হলেও শুধু প্রান্ত আগলে দলকে টেনে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তার ব্যাটেই স্কোরটা দেড়শোর কাছাকাছি গেছে। ৭১ বলে ৭৫ রান করা ব্যাটারকে দলীয় ২৪৬ রানে ক্যাচ আউট করেছেন আর্চার। তাতে স্কোরবোর্ড আর বেশি সমৃদ্ধ হয়নি। সাকিবের ইনিংসে ছিল ৭টি চার।
তাইজুলের বিদায়ে অষ্টম উইকেটের পতন
মিরাজের পর তাইজুল ইসলামও সাকিবের সঙ্গী হতে পারেননি। বরং আর্চারের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ২ রানে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। তার বিদায়ে পতন হয়েছে অষ্টম উইকেটের।
আফিফের পর দ্রুত ফিরলেন মিরাজ
আফিফের বিদায়ের পর শেষ দিকে সাকিবের যোগ্য সঙ্গীর প্রয়োজন ছিল। যেহেতু রান বাড়িয়ে নেওয়ার সময় তখন। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ কাজের কাজ কিছুই করতে পারলেন না। অভিষিক্ত লেগস্পিনার রেহান আহমেদের বাজে বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৫ রানেই আউট হয়েছেন। তার ৬ বলের ইনিংসে ছিল শুধু একটি চার।
আফিফের বিদায়ে ভাঙলো ৪৯ রানের জুটি
মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ দ্রুত বিদায় নিলে চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তখন ৫ উইকেটে স্কোর ছিল ১৬৩। তার পর সাকিবের স্ট্রাইক রোটেশনে সেই চাপ দ্রুত কাটিয়েও ওঠে। আফিফ-সাকিবের ব্যাটেই স্কোর দুইশ ছাড়িয়েছে। ৪৯ রানের জুটি ভাঙে আফিফের বাজে শট সিলেকশনে। ওকসের বলে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানে ফিরেছেন তিনি। অবশ্য এই জুটি গড়ার পথে ৫২তম ফিফটিও তুলে নেন সাকিব। দলের বিপদে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটির দেখা পেয়েছেন বামহাতি অলরাউন্ডার।
মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে হারিয়ে আবার চাপে বাংলাদেশ
শান্তর পর সাকিবের সঙ্গেও জুটি গড়েন মুশফিক। যদিও সেটা খুব বড় ছিল না।৩৮ রান যোগ করেন তারা। জুটিটা বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেননি মুশফিক। রশিদের গুগলিতে বোল্ড হয়ে ৭০ রানে ফিরেছেন। তার ৯৩ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চার। এর এক ওভার পর ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহও। রশিদকে ছক্কা মেরে এক বল পর অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন। দ্রুত দুই উইকেটের পতনে আবার চাপে পড়ে যায় স্বাগতিক দল।
ফিফটির পর সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টায় মুশফিক
শান্তর রান আউটে দারুণ জুটি ভাঙলেও সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে আবার জুটি গড়ার চেষ্টায় আছেন মুশফিক। শান্ত যে ওভারে ফিরেছেন ওই ওভারে ক্যারিয়ারের ৪৩তম ফিফটিও তুলে নিয়েছেন উইকেটকিপার ব্যাটার। মুশফিক ফিফটির দেখা পেয়েছেন ৬৯ বলে।
দ্বিতীয় ফিফটি তুলেই রান আউট শান্ত
দ্রুত দুই ওপেনারকে হারানোর পর শত রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান শান্ত-মুশফিক জুটি। তাদের এই জুটি দারুণ মনে হচ্ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক রান আউটে শান্ত সাজঘরে ফিরলে ভেঙে যায় ৯৮ রানের এই জুটি। সিরিজের দ্বিতীয় ফিফটি তোলার পরের ওভারেই শান্ত রান আউট হয়েছেন। ফেরার আগে ৭১ বলে ৫৩ রান করেছেন তিনি। তাতে ছিল ৫টি চার।
শত রানের জুটিতে ধাক্কা সামলেছেন শান্ত-মুশফিক
১৭ রানে পড়ে যায় বাংলাদেশের দুই উইকেট। দ্রুত দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপেও পড়ে যায় তারা। ধীর গতির পিচে আস্তে আস্তে সেই ধাক্কা সামাল দিতে অবদান রাখেন মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এই জুটি গড়ার পথে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে ফিফটি তুলে নিয়েছেন শান্ত। ফিফটি পূরণ করতে ৬৯ বল খেলেছেন তিনি।
৩ ওভারেই লিটনের পর ফিরলেন তামিম
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শুরুর ধস সামলাতে অবদান ছিল তামিম ইকবালের। তৃতীয় ম্যাচে অবশ্য তার শুরুটা খারাপ ছিল না। কিন্তু লিটনের বিদায়ের পর টিকতে পারলেন ৩ ওভার পর্যন্তই। কারানের বল ঠিকমতো বুঝতে পারেননি। ফ্লিক করতে গেলে বল দুর্ভাগ্যজনকভাবে লিডিং এজ হয়ে উঠে যায় বাতাসে। পয়েন্টে তার সহজ ক্যাচ নিতে ভুল করেননি জেমস ভিন্স।
আগের দিন ভালো ব্যাটিং করা তামিম এদিন ৬ বলে ১১ রানে ফিরেছেন। তাতে ছিল ১টি চার।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে আউট লিটন
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো কিছুর আশা নিয়ে তৃতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটিং নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু ওপেনিংয়ে নেমে লিটন দাস প্রত্যাশিত কিছু উপহার দিতে পারেননি। দ্বিতীয় ওয়ানডের মতো সেই স্যাম কারানের বলেই ডাক মেরে সাজঘরে ফিরেছেন। দুই ম্যাচেই খালি হাতে ফিরেছেন তিনি। কারানের অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মারতে গেলে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন জস বাটলারের।
হোয়াইটওয়াশ এড়াতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
ইংল্যান্ডের কাছে প্রথম দুই ওয়ানডে হেরে সিরিজ খুঁইয়ে বসেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের চোখ রাঙাচ্ছে হারানো দিনের পুরনো ভাগ্য। চট্টগ্রামে হোয়াইটওয়াশের ভয় নিয়ে আজ তৃতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিং করতে নামছে স্বাগতিক দল।
বাংলাদেশ একাদশে একটি পরিবর্তন, ইংল্যান্ডের তিনটি
বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন। পেসার তাসকিন আহমেদকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় একাদশে এসেছেন পেসার এবাদত হোসেন। ইংল্যান্ড দলে তিনটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। অভিষেক হয়েছে লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার রেহান আহমেদের। তাছাড়া ফিরেছেন জোফরা আর্চার ও ক্রিস ওকস।
হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় বাংলাদেশ
গত ডিসেম্বরে এই চট্টগ্রামের মাঠেই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছিল। ভারতের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করলেও শেষ ম্যাচ ভারতীয়দের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে হেরেছে বাংলাদেশ। বিরাট কোহলির সেঞ্চুরি ও ঈশান কিষানের ডাবল সেঞ্চুরিতে ভারত ৮ উইকেটে ৪০৯ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়েছিল। জবাবে ১৮২ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দল! তাতে ২২৭ রানের বিশাল পরাজয়ে সিরিজ শেষ করতে হয়েছে। তাছাড়া ২০১৪ সালের পর ওয়ানডে সিরিজে বেশ কয়েকবার হোয়াইটওয়াশ হলেও ঘরের মাঠে কোনও প্রতিপক্ষই স্বাগতিক বাংলাদেশকে এই স্বাদ দিতে পারেনি। কিন্তু ৯ বছর পর সেই রেকর্ড এখন হুমকির মুখে। হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেছে স্বাগতিক দল।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, এবাদত হোসেন, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান।
ইংল্যান্ড একাদশ: জেসন রয়, ফিল সল্ট, ডেভিড মালান, জেমস ভিন্স, স্যাম কারান, জস বাটলার (উইকেটকিপার), মঈন আলী, ক্রিস ওকস, রেহান আহমেদ, আদিল রশিদ, জোফরা আর্চার।