শনিবার (১১ মার্চ) রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার খায়েশ হয়েছে। তাই তারা নীল নকশার মাধ্যমে ২০২৪ সালে নির্বাচন করতে চায়। তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চায়৷ এদেশ হচ্ছে তাদের জমিদারি। আমাদের সঙ্গে প্রজার মত ব্যবহার করছে। আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। জনজণের উত্তাল তরঙ্গে আন্দোলন সৃষ্টি করে তাদের পরাজিত করতে হবে।
ভয় পেয়ে বিএনপি নির্বাচনে আসবে- মন্ত্রীদের এমন মন্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, বিএনপি এই সরকারের অধীনে, হাসিনার অধীনে, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। আমরা ১০ দফা ঘোষণা করেছি। সেখানে বলেছি, সরকারের পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীনরা নতুন করে গ্রেফতারের ভয় দেখানো শুরু করেছে। তারা গ্রেফতার, মামলা দিয়ে দেশের মানুষকে দমিয়ে রাখতে চায়। গত ১৪ বছর তারা একই অস্ত্র ব্যবহার করেছে। কিন্তু তারা সফল হয়নি। তারা বিএনপির নেতৃত্ব ধ্বংস করতে চায়। জনগণের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে একদলীয় বাকশাল করতে চায়৷ সরকার দেশকে আজ নরকে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, সিদ্দিকবাজারে ভবন বিস্ফোরণ, চট্টগ্রামে ও সায়েন্স ল্যাবের বিস্ফোরণ হলো। কারণ সরকারের যে সব ডিপার্টমেন্টের এসব দেখার কথা তারা তা দেখছে না৷ তারা দায়িত্ব উপেক্ষা করছে। এসব ঘটনার দায় সরকারকে নিতে হবে।
দুর্নীতির কারণে সরকারের উন্নয়নের ফানুস চুপসে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, অসৎ উদ্দেশে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করছে। জনগণকে জিজ্ঞেস করলে তারাও বলবে, হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না।
ফখরুল বলেন, অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য ১৭৩ দিন সহিংস আন্দোলন করেছে আওয়ামী লীগ-জামায়াত। মানুষ হত্যা করেছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে, তা দেখে সরকারের গাত্রদাহ হচ্ছে। সরকার এখন উস্কানি দিচ্ছে, বারবার উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে। আমাদের সামনে বিকল্প কোন পথ নেই। অনেক দুষ্টামি করেছে সরকার। পঞ্চগড়ে সম্প্রদায়িক ঘটনা সৃষ্টি করেছে। সেখানে প্রশাসন নীরব ভুমিকা পালন করেছে৷ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিএনপি ১৮১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব বন্ধ করতে হবে। এভাবে সম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ট করে দেশের মানুষকে বোকা বানানো যাবে না।
মানববন্ধনে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে নাভিশ্বাস। মানুষ খেতে পারছে না। যেদিনই বিএনপির কর্মসূচী, সেদিনই গ্রেফতার। সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ জরতে হবে। বিএনপি নির্বাচনে ভয় পায় না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সবিচ রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চলনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবলদের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।